বর্তমানে মোবাইলনেই এমন মানুষ পাওয়া দায়। বাচ্চা থেকে বুড়ো শিক্ষিত থেকে মূর্খ সবার হাতে মোবাইল। মোবাইল একটি অতি প্রয়জনীয় গ্যাজেট হয়ে পড়েছে। কিন্তু বর্তমানে মোবাইলের দাম ও রিচার্জ বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় আমাদের অনেকেরি মনে আসে যদি মোবাইল দ্বারা বেশকিছু টাকা ইনকাম করা যায় তাহলে বেশ ভালো হতো। অনেকেরি মনে আসে সত্যিকি মোবাইল দ্বারা ইনকাম করা যায় ? আমি বলব আলবাত ইনকাম করা যায়। আজকের প্রতিবেদনে জানবো হাতে বন্দি মোবাইল দিয়ে কিভাবে ইনকাম করা যায় ও কত টাকা ইনকাম করা যায়। আমাদের সকলের কাছে দামি কমদামি কেমেরা মোবাইল আছে আর সেই মোবাইল থেকে একটি চাকরির থেকেও বেশি কিভাবে ইনকাম করা যায় সেই ব্যাপারে আজ আমরা জানব। আমাদের প্রতিবেদন গুলি ভালোলাগলে অবশই ফলো করবেন ও আপনার মূল্যবান মতামত জানাবেন।
পকেট বন্দি দামী কমদামী মোবাইল আজ অতি প্রয়জনীয় ও শক্তিশালী একটি গেজেট। আজ কম্পিউটারের প্রায় সমস্ত কাজ মোবাইল দিয়ে হয়ে যায়। মোবাইলের কেমেরা আজ এতো ভালো যে ভালো ভালো কেমেরার বিক্রি কমতে বসেছে। মোবাইল দিয়ে হয়না এমন কাজ কম আছে ,আপনি চাইলে মোবাইদিয়ে ঘরে বসেই ইনকাম পর্যন্ত করতে পারেন।
· শর্ট ভিডিও :
আমরা আমাদের দিনের বেশির ভাগ সময় অনলাইনে মোবাইলের মধ্যে কাটিয়ে থাকি। ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে অনেক শর্ট ভিডিও দেখে থাকি। শর্ট ভিডিও গুলি খুবই আকর্ষক হয়েথাকে তাই এই ভিডিও প্রচুর মানুষ দেখেন। কিছু বছর আগে টিক টিক নামক একটি মোবাইল app রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ছিল। টিক টক থেকে অনেকেই রাতারাতি প্রচুর টাকা ইনকাম করেছিল। টিক টক বন্ধ হওয়ার পরে Youtub আর Facebook এই পরিষেবা নিয়ে আসে। আপনি চাইলে সুদু মাত্র মোবাইল ব্যবহার করে এখন থেকে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারেন।
বড়ো বড়ো সোশ্যাল মিডিয়া প্লার্টফর্ম এখন আপনাকে সুযোগ করে দিচ্ছে ছোট ছোট ভিডিও বানিয়ে আপনি যাতে ইনকাম করতে পারেন। যেমন ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টা রিল ইত্যাদি। আপনিকি জানেন ইউটিউব ছোট ভিডিও ক্রিয়েটরদের জন্য কোটি টাকা দান করছে। আর এটা শুনেও আপনি অবাক হয়ে যাবেন কিছু কিছু শর্ট ভিডিও ক্রিয়েটার ২৫ থেকে ৭০ হাজার টাকারও বেশি টাকা ইনকাম করে। এখান থেকে সুদু ভিডিও বানিয়ে নয় আরো অনেকে উপায়ে ইনকাম করা যায় - যেমন এফিলিয়েট মার্কেটিং , ব্র্যান্ড প্রমোশন ইত্যাদির মাধ্যমে। একজন দারুন কথা বলেছিলেন - যে - ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট নাকরে রিল পোস্ট করা উচিত। শর্ট ভিডিও আপনি যেকোন বিষয়ে করতে পারেন যেমন নাচ, গান, অভিনয়, ম্যাজিক , গল্প, রান্না ইত্যাদি যে বিষয়ে আপনি পারদর্শী সে বিষয়ে ভিডিও বানাতে পারেন। যদি এর মধ্যে কিছুই না পারেন তবে রাস্তায় চলতে চলতে ভিডিও বানিয়ে পোস্ট দিন|
· ভিডিও চ্যানেল :
সাধারণত আমরা দিনের বেশিরভাগ সময়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে মুখ বুজে থাকি আর ইউটিউব এবং ফেসবুকে কত যে ভিডিও আমরা দেখি তার ইয়াত্তা নেই কিন্তু আপনি কি জানেন এই ইউটিউব এবং ফেসবুকের যে ভিডিও গুলো আমরা দেখছি সেখান থেকে যারা এই ভিডিও তৈরি করেছে তারা কি পরিমাণ টাকা ইনকাম করে? এটা বিশ্বাস না হলে সত্যি। সোশ্যাল মিডিয়াতে দুই ধরনের লোক পাওয়া যায় এক যারা ক্রিয়েটার, এরা সোশ্যালমিডিয়াতে নতুন নতুন বিষয় বস্তু দিয়ে যাচ্ছে। দুই যারা সাধারন কাস্টমার যেমন আমরা, আমরা সারাদিন সেইসব ভিডিও দেখে মনোরঞ্জন হই অথবা কিছু শিখছি। কিন্তু যারা ক্রিয়েটার তারা এখান থেকে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে সমর্থ হচ্ছে কারণ তাদের ভিডিওর উপর কোম্পানিগুলো অ্যাডভার্টাইজমেন্ট চালায় সেই অ্যাডভার্টাইজমেন্ট এর একটি অংশ তাদেরকে দিয়ে থাকে। শুধুমাত্র ভিডিও বানিয়ে আপনি প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারেন। আমাদের দেশে খুব ভালো একজন ইউটিউবার মাসে 1 লক্ষ থেকে 5 লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করে থাকেন। কিছু কিছু ইউটিউবার এর থেকেও বেশি টাকা ইনকাম করতে সমর্থ হয়।সুদু মাত্র মোবাইল দিয়েই এই ইনকাম করতে পারেন।
উটিউব ও ফেইবুকে ভিডিও চ্যানেল বানিয়ে আপনি যথেষ্ট উপার্জন করতে পারেন। আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সে বিষয়ে বিস্তারিত ভিডিও বানিয়ে নিয়মিত পোস্ট করতে থাকুন। ভিডিও মিনিমাম ১২ মিনিট ও মেক্সিমাম ১৮ মিনিটের হয় উচিত। এর থেকেও বেশি সময়ের ভিডিও আপনি বানাতে পারেন তবে দর্শক বোর হয়ে যেতে পারে। এর থেকে কম সময়ের হলে আপনার ইনকাম কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। এ ক্ষেত্রে মাথায় রাখবেন কারো কপি করা ভিডিও, গান, ছবি দিতে পারবেননা। অনেক ইউটিউবার আছেন যারা ইউটিউব থেকে প্রতিমাসে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করেন। আপনি শুনে অবাক হবেন যে ফেসবুকে ভিডিও দিয়ে অনেকেই রাতারাতি লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। তবে প্রথমেই আপনার দ্বারা এতো ইনকাম হবেনা এর জন্য লেগে থাকতে হবে, শিখতে হবে বিস্তারিত জেনে সঠিক উপায়ে চ্যানেলে কাজ করে যেতে হবে।
· ই-বুক :
ই-বুক নামটা হয়তো আপনার কাছে নতুন। ই-বুক আসলে ডিজিটাল বুক। কোনো বই যখন আমরা অনলাই থেকে ডাউনলোড করে পড়ি তখন সেটাকে ই-বুক বলে। এরকম বই আপনি অনলাইনে প্রচুর পেয়ে যাবেন। নামিদামি যেকোনো বই আপনি ই-বুক রূপে কিনে পড়তে পারেন। এরকম ইবুক আপনি মোবাই দিয়ে তৈরী করতে পারেন।
আপনি একবার ই-বুক লিখে সারা জীবন ইনকাম করতে পারেন। কারণ এই বই ডিজিটালি পাওয়া যায়। amazon এর মতন অসংখ্য সংস্থা আছে যারা বিনা পয়সায় আপনার ই-বুক পৌঁছে দেবে বিশ্বের দরবারে। আপনার লেখা বই যদি ভালো হয় জনপ্রিয় হয় আপনি দীর্ঘ দিন ধরে ইনকাম করতে পারবেন। শুধুমাত্র amazon kindle এর মাধ্যমে বই পাবলিশ করে অনেকেই মাসে মোটা অংকের টাকা ঘরে তুলছে। চেষ্টা করলে আপনিও পারবেন। আর এই কাজ গুলি আপনার হাতে বন্দি মোবাইল দিয়েই হয়ে যাবে |আপনি যে বিষয়ে জানেন সেই বিষয় নিয়ে ই-বুক লিখতে পারেন।অথবা কাউকে দিয়ে একবার লিখিয়ে নিয়ে আপনি পাবলিস্ট করতে পারেন। এটি একটি পিসিবি ইনকাম। একবার আপলোড করে ছেড়ে দিন ,বই যতবার বিক্রি হবে আপনি ততবার ইনকাম করবেন। দারুন ইনকামের পথ এটা।
· ফটোগ্রাফি :
হাতে বন্দী মোবাইল দিয়ে আমরা প্রতিদিন কতনা ফটো তুলি আর এক একটা ফটো এত সুন্দর তোলেন যা নিয়ে বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের মধ্যে অনেক বাহবা কুড়িয়েছেন ,কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন মোবাইল দিয়ে তোলা এই সুন্দর ফটো গুলো আপনি বিক্রি করে যথেষ্ট পরিমাণে টাকা উপার্জন করতে পারেন। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা ফটো তুলতে ভালবাসে যারা জানে ফটো তোলার আদব-কায়দা এবং সুন্দর সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটো তারা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে থাকে। সেগুলো প্রচুর মানুষ দেখে এবং আমাদের মন কাড়ে। এই ধরনের ফটো তুলে আপনি ভালো একটা ইনকাম তৈরি করতে পারেন। আপনি যদি মোবাইল ব্যবহার করে ফটো তুলে ইনকাম করতে চান লেগে পরতে পারেন প্রকৃতি, পশু পাখি, মানুষ যা খুশির ভালোমানের ফটো তুলতে পারলেই হলো।
অনলাইনে অনেক সাইট আছে যারা আপনাকে সুযোগ করে দিচ্ছে সুদু মাত্র মোবাইল ব্যবহার করে ফটো তুলে ফ্রীতে তাদের সাইটে আপলোড করে ইনকাম করার। এ ছাড়াও অনেক সাইটে ফটোর কম্পিটিশনে নাম লেখাতে পারেন। বিভিন্ন কোম্পানি তাদের প্রডাক্টের ফটোগ্রাফির জন্য কম্পিটিশনের এরেঞ্জ করে থাকে তাতেও অংশগ্রহন করতে পারেন। মোটা অঙ্কের প্রাইজ মানি দিয়ে থাকেন। যদি যত সামান্ন ক্রিয়েটিভিটি থাকে আপনিও আপনার মোবাইল বেরকরে লেগে পরতে পারেন।
· ব্লগিং :
আমাদের মধ্যে অনেকেই অল্প একটু লিখতে ভালোবাসেন এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রতিনিয়ত তাঁরা কিছুনা কিছু লিখে থাকে। আপনি আপনার হাতের মোবাইলটি ব্যবহার করে এবং লেখালেখি করে যথেষ্ট ভালো একটি ব্লগ চ্যানেল চালু করতে পারেন। ব্লগিংয়ের মাধ্যমে প্রচুর টাকা ইনকাম করা যায়। যেখানে আপনি আপনার শিক্ষা, বিভিন্ন সাবজেক্ট এর ব্যাপারে আপনার নলেজ শেয়ার করতে পারেন যদি আপনার হাতের মোবাইলটা ঠিক করে ব্যবহার করতে পারেন আর যদি একটু লেখালেখি করতে ভালোবাসেন তাহলে আপনিও ব্লগিং শুরু করতে পারেন। আপনি জেনে অবাক হবেন কিছু ফুলটাইম ব্লগার মাসে ব্লগ থেকে ১ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে সক্ষম। যদি আপনার লেখালেখির হাতটা একটু ভালো থাকে তাহলে পার্ট টাইম ব্লগিং করে ইনকাম শুরু করতে পারেন। নিয়মিত লেখালেখি করলে সুদু ব্লগ থেকে আপনি ১ থেকে ৭ হাজার টাকা ইনকাম তৈরী করতে সক্ষম হবেন। গুগল আপনাকে সুযোগ করে দিচ্ছে ফ্রীতে ব্লগ পোস্ট করে ইনকাম করার।তাই Blogger.com-এ গিয়ে আজি খুলে ফেলুন একটি ফ্রি ব্লগ সাইট আর শুরু করেদিন ইনকাম।
আরো পড়ুন
সেকেন্ডহ্যান্ড মোবাইলের ব্যবসা।
অল্প ইনভেস্টমেন্ট ১০ লাভজনক ব্যবসা।
বিনা ইনভেস্টমেন্টে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা
· আশাকরি বুঝতেই পারলেন হাতে বন্দি মোবাইল সুদু কথা বলার জন্য নয়। এখান থেকে ইনকামও করতে পারেন। মাথায় রাখবেন অনলাইনে দুধরণের মানুষ আসেন এক যারা অনলাইনে কিছু ভেলু যুক্ত করেন আর এক ধরনের মানুষ ইন্টারটেন বা লারনিং গ্রহণ করতে আসেনএরা ভেলু যুক্ত করেননা। তাই আপনি কতক্ষন সোসালমিডিয়াতে সময় কাটাচ্ছেন সেটি কেলকুলেট করে তার থেকে সময় বের করে এবার ক্রিয়েটার হয়ে যান আর ইনকাম শুরু করুন। নিজের আর্থিক পরিস্থিতিকে আরো সুদৃঢ় গড়ে তুলুনসুদু মাত্র মোবাই দিয়ে । ধন্যবাদ।