বিনা ইন্ভেসমেন্টে ৫ টি দারুন লাভজনক ব্যবসা।


আমাদের অনেকেরই ধারণা ব্যবসা শুরু করতে মোটা অংকের টাকা দরকার। আমরা ভুলে যায় যে ভালো বিজনেস মডেল অনেক সময় টাকা ছাড়াই দারুন একটি ব্যবসা তৈরী করে। আপনার কাছে যদি দারুন কোন ব্যবসার মডেল থেকে বা তৈরী করতে পারেন তাহলে নিশ্চিন্তে আপনি একটি নতুন স্টার্টআপ চালু করতে সক্ষম হবেন। টাকা থাকলেই যে ব্যবসা শুরু করাযায় এ কথা ঠিক নয়। টাকা না থাকলেও বিনা ইনভেস্টমেন্টে ব্যবসা শুরু করা যায়। আজ এই প্রতিবেদনে তেমনি ৫ টি বিনা ইনভেস্টমেন্টের ব্যবসার কথা জানাবো। তবে বিস্তারিত জানবার আগে কিছু কথা জানিয়ে রাখতে চাই। ব্যবসাকে  বড়ো করতে প্রচুর খাটনির দরকার। উন্নতির নেশা থাকলে তবেই ব্যবসা শুরু করুন। আর এখানে যে ব্যবসার কথা আমি আলোচনা করতে চলেছি সেগুলিতে খাটতে  পারলে প্রতি মাসে ১ লক্ষ টাকার ও বেশি ইনকাম করতে পারবেন। সুদু মাত্র ধৈয্যের সঙ্গে কাজ করতে হবে।  

বিনা ইন্ভেসমেন্টে ৫ টি  ব্যবসা :- 

    আইটি মেন্টেন শপ : -

    আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা  না থাকলেও আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। খুব বড়ো লেবেলে তৈরী করতে পারলে বছরে কোটি টাকা ইনকাম করতে পারেন। কিভাবে এটা করা সম্ভব ? আপনি  প্রথমেই খোঁজ নিন আপনার এরিয়াতে আইটি ফাইল কে তৈরী করে , কোনো চার্টার্ড একাউন্ট এর ফার্ম এর খোঁজ নিন তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরী করুন এবং জেনেনিন আইটি ফাইলের রকমফের এবং তার ডকুমেন্ট ও কস্ট জেনেনিন। হিসাবটা একটু জেনেনিই - একটি সাধারণ আইটি ফাইল তৈরী করতে খরচ পরে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা  কিন্তু কাস্টমারের কাছ থেকে নেওয়া হয় ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। এখানে আপনি সোজাসুজি ২০০ টাকা লাভ করছেন। 

                                                           এখন থেকে কিভাবে ১ লক্ষ টাকা বা ১ কোটি টাকা ইনকাম করা যায়। আপনাকে প্রতিদিন ১ থেকে ২ ঘণ্টা মার্কেটিং এর জন্য টাইম দিতে হবে। প্রথমে হেন্ড বিল ছাপিয়ে বাজার অঞ্চলে প্রতি দোকানে দোকানে হেন্ডবিল দিন। এটা আপনাকে প্রতিদিন করতে হবে। নির্দিষ্ট টাইম ঠিক করে হেন্ডবিল ছড়াতে থাকুন। আমাকে বিশ্বাস করুন আপনি প্রতিদিন একটি দুটি কল পাবেন। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সকলকে জানিয়ে দিন আপনি এই কাজ করছেন। আপনাকে এভাবেই ১ লক্ষ ফাইলের কাজ করতে হবে। 

    প্রথমদিকেই খেই হারাবেননা। দৃঢ়তার সঙ্গে লরাই করে আপনাকে ১লক্ষ কাস্টমার লক্ষ পূর্ন  করতে হবে। কাজটা প্রথমেই কঠিন মনে হলেও আপনার প্রচার ও পরিচয় বেড়ে গেলে কিছু কাস্টমার হলেই আপনি এই কাজে আনন্দ পেয়ে যাবেন। 

                                                            এবার একটু হিসাবটা দেখে নিই। যদি আমি একটি সাধারণ হিসাব কোসি যে ১লক্ষ আইটি ফাইল করে আপনি প্রতি ফাইলে ২০০ টাকা ইনকাম করেন তাহলে আপনার ইনকাম = ১০০০০০ * ২০০ = ২ কোটি।  এটি এক বছরের ইনকাম। প্রতি বছরেই এই ইনকাম বেড়েই চলবে যদি আপনি  মনোযোগ দিয়ে দৃতার সঙ্গে কাজ ও প্রচার চালিয়ে যান। এখানে ইনভেস্ট কম হলেও সময় ও খাটুনি আপনাকে প্রচুর করতে হবে। 

    আপনাকে প্রত্যেকটি কাস্টমারের আইটি প্রতি বছর মেনটেইন্ড করতে হবে। প্রতি বছর তাদেরকে ফোন করে বা SMS এর মাধ্যমে যে ইমেইল করে আইটি রিটার্ন জমা করার কথা মনে করিয়ে দিতে হবে। কাস্টমার নিজের ফাইল হারিয়ে ফেল্লে আপনি সব ফাইল সুন্দর করে গুছিয়ে রাখবেন।পরবর্তী কালে আপনি মোবাইল আপ তরী করতে পারেন যেখানে কাস্টমার ডিজিটালি তার প্রতি বছরের আইটি ফাইল পেয়ে যাবে এবং প্রয়জনে শেয়ার ও প্রিন্ট করতে পারবে। 


    বাইক / কার ইন্সুরেন্স :-

    আপনি যদি শুধুমাত্র H.S. পাস করে থাকেন তাতেও এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স এর মত অনেক ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি আছে যারা আপনাকে ট্রেনিং দিয়ে সার্টিফাই করবে যাতে আপনি তাদের হয়ে বাইক বা কারের ইন্সুরেন্স করতে পারেন আর এর পরিবর্তে আপনাকে একটি কমিশন দেওয়া হবে। এই কমিশন 100 টাকা থেকে 450 টাকা পর্যন্ত হতে পারে। কিভাবে করবেন?

    আপনাকে একটি বিশাল ডাটাবেজ তৈরী করতে হবে। দুচাকা  এবং চারচাকা যে ধরনের ইন্সুরেন্স আপনি  করবেন সেই ইন্স্যুরেন্সের একটি বড় ডাটাবেজ ধীরে ধীরে তৈরী করে নিতে হবে। কিভাবে এই ডাটাবেজ তৈরি করবেন? আপনার অঞ্চলে ঘোরাঘুরি করলে আপনি দেখতে পাবেন প্রচুর দু চাকা বা চার চাকার সার্ভিসের দোকান পেয়ে যাবেন, তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে আপনাকে যাতে তাদের সার্ভিস করা প্রত্যেকটি গাড়ির ইন্স্যুরেন্সের তথ্য আপনি পেতে পারেন। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত অ্যাডভার্টাইজ চালাতে হবে, ব্যক্তিগতভাবে প্রচার করতে হবে, হ্যান্ডবিল বা রিপ্লেট  আপনি ছড়াতে  পারেন। এরকম হাজারো পথ আছে যেভাবে আপনি আপনার এই ডাটাবেজ জোগাড় করতে পারেন।আপনার কাছে বিপুলসংখ্যক ডেটাবেস হলে এবং তাদের ঠিকঠাক কাজ করাতে পারলে আপনি মাসে হেসে খেলে 50 হাজার থেকে 1 লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারেন।

    বড়ো বড়ো কোম্পানি এখন এই ইন্সুরেন্সের কাজে নেবেছে যেমন "bankbazaar","phonepe" ইত্যাদির মতন কোম্পানির। আপনি প্রথমেই একটু বড়ো করে শুরু করতে চাইলে মোবাইল app বা ওয়েব সাইট বানিয়ে শুরু করতে পারেন। 


    ফ্লাট / জমি বোকারী :-

     জমি বাড়ি বা ফ্লাটের বোকারীর ব্যবসা শুরু করতে পারেন।  আপনি যদি খুব মিশুকে সভাবের হন তাহলে আপনার দ্বারা এইকাজ সহজেই হতে পারে। আপনি হয়তো বলবেন অনেকেই এই কাজ করছে কিন্তু আপনি অন্য  ভাবে করবেন। আপনাকে পরিকল্পিতভাবে এবং গুছিয়ে এই কাজটি করতে হবে। প্রথমেই কি কি করতে হবে ? 

    প্রথমেই আপনি খোঁজ নিন আপনার এরিয়াতে এ ধরনের কাজ কে কে করছে, তাদের একটি লিস্ট বানান এরপর খোঁজ নিন কাদের কাছে কি ধরণের প্রপার্টি আছে যারা বিক্রি করতে চাইছে। এই খোঁজ আপনি ডাইরেক মালিকের কাছ থেকে নিতে পারেন বা পাড়ার দালালদের কাছ থেকেও নিতে পারেন। এবার আপনি সোশ্যাল মিডিয়ার সাইটগুলোতে বিভিন্ন প্রোপাটি  সেলিং  গ্রুপ গুলিতে যুক্ত হয়ে যান। মিনিমাম দশটি থেকে কুড়িটি গ্রুপে যুক্ত হতে হবে। এখান থেকে আপনি প্রচুর ডাইরেক্ট কাস্টমার এর কন্টাক্ট পেয়ে যাবেন। তাদের একটি লিস্ট বানান এবং তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের কিরকম চাহিদা আছে সেটি বিস্তারিত জেনে নিন। এবার কাস্টমার এর চাহিদা অনুযায়ী খোঁজ নিন আপনার পাড়ায় যে দালাল গুলো আছে তাদের কাছে কি এই ধরনের প্রপার্টি আছে? যদি থাকে খুব ভালো আপনি প্রপার্টি সেলিং করিয়ে দিন। আর যদি না থাকে আপনি এটিকে নোট করে রাখুন এবং ওই ধরনের প্রপার্টির খোঁজ করুন , প্রপার্টি যেদিন পাবেন কাস্টমারের সঙ্গে কন্টাক করে লেনদেন করে দিতে পারেন। এভাবেই প্রতিনিয়ত পরিশ্রমের সঙ্গে কাজটি করে গেলে আপনি মাসে একটি কাজ করতে পারলে এক লক্ষ থেকে 5 লক্ষ টাকা পর্যন্ত  ইনকাম করতে পারবেন।এ ছাড়াও প্রপার্টি মেনেজার হিসাবেও আপনি বিনা ইনভেস্টমেন্ট ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 


    ডিজিটাল মার্কেটিং:-

    সোশ্যাল মিডিয়ায় যদি আপনার বিশাল সংখ্যক ফলোয়ার থাকে যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, পিন্টারেস্ট ব্লগ ইত্যাদিতে এবং গুগোল অ্যাডভার্টাইজমেন্ট ও ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজমেন্ট সম্পর্কে আপনার ভাল ধারনা থাকে তাহলে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করতে পারেন। যদি গুগোল অ্যাডভার্টাইজমেন্ট ও ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজমেন্ট সম্পর্কে আপনার ধারণা না থাকে তাহলে আপনি ইউটিউব এ একটু খেটে পড়াশোনা করলে সহজেই শিখে যেতে পারেন। আপনার এরিয়াতে অনেক ছোট ছোট ব্যবসা আছে যারা সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে বা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে ততটা ওয়াকিবহাল নয় তাদের সঙ্গে সম্পর্ক করে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ শুরু করতে পারেন। ডিজিটাল মার্কেটিং এ আপনার পরিচিতি বাড়লে এবং আপনার কর্মদক্ষতা নিপুন হলে আপনি সহজেই কাজ পাবেন। এবং এখান থেকে আপনি প্রচুর পরিমাণে ইনকাম তৈরি করতে পারেন।

    বর্তমানে সবকিছুই অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়ছে। অনলাইনের এই বিপুল স্রোতে সকল ছোট বড়ো ব্যবসা গা-ভাসতে চাইছে।কিন্তু কিভাবে অনলাইনে মার্কেটিং করতে হবে বা ব্র্যান্ডিং করতে হবে তা অনেকেই জানেনা তাই দরকার ডিজিটাল মার্কেটিং যারা করেন তাদের। কনটেন্ট মার্কেটিং,ইনফুলেনসার মার্কেটিং থেকে সুরুররে গুগল এড , ফেসবুক-এর মতন বিষয়কে যারা জানে তাদের।আগামী বছর গুলিতে ডিজিটাল মার্কেটিং-এর চাহিদা আরো বেড়ে যাবে।  


    ব্যবসার মিডল ম্যান:-

    আপনাকে প্রথমেই খোঁজ নিতে হবে আপনার এরিয়ায় কোন কোন ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট আছে এবং তাদের সঙ্গে একটি ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। মনে করুন আপনার এরিয়াতে একটি টি-শার্ট কারখানা বা নাইটি কারখানা বা চুরিদার কারখানা আছে। তাদের সঙ্গে আপনি একটি সম্পর্ক গড়ে তুলুন এবং তাদের জানান তাদের প্রোডাক্ট আপনি অর্ডার তুলে বিক্রি করবেন। তাদের কাছ থেকে তাদের প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে সেটিকে ডিজিটাল দুনিয়ায় নিয়ে আসুন। সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্ডিয়ামার্ট এর মত সাইটগুলিতে আপনি আপনার নাম্বার দিয়ে এগুলির প্রচার করুন। আপনার প্রচার খুব ভালোভাবে হলে আপনি সহজেই বাল্ক অর্ডার পেতে শুরু করবেন। এছাড়াও গুগোল অ্যাডভার্টাইজমেন্ট ও ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজমেন্ট এর মাধ্যমে আপনি প্রচুর অর্ডার জেনারেট করতে পারবেন। এটা যখন আপনি খুব ভালোভাবে খুব বড় মাত্রায় করতে পারবেন আপনি সুন্দর একটি ইনকাম তৈরি করতে পারবেন।


    এই ছিল আমাদের আজকের বিনা ইনভেস্টমেন্টে পাঁচটি দারুন ব্যবসার আইডিয়া। আইডিয়া গুলো কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং বন্ধুদের সঙ্গে এই পোস্টটি শেয়ার করবেন যাতে আমরা সকলেই একসাথে হাতে হাত ধরে ইনকাম করতে পারি এবং নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি। ধন্যবাদ |

    ১০ হাজার টাকায় ১০ টি লাভজনক ব্যবসার সন্ধান

    কিভাবে app নির্ভর একটি টেক্সী ব্যবসা শুরু করবেন।

    অল্প টাকা বিনিয়োগ করে প্রচুর টাকা ইনকাম করার ৫ টি সন্ধান।

    জামাকাপড়ের ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন ?

    অনলাইনে সহজে টাকাউপার্জনের সঠিক উপায়।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    নবীনতর পূর্বতন